ইসলামী ব্যাংকিংয়ে ক্যাশ ওয়াক্‌ফ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

Spread the love

শিক্ষা ও জনসেবার উন্নয়নে ক্যাশ ওয়াকফকে সামাজিক সংস্কৃতিতে পরিণত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম।
শনিবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বায়তুল মোকাররম আন্তর্জাতিক ইসলামি বইমেলায় ‘ইসলামী ব্যাংকিং-এ ক্যাশ ওয়াক্ফ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন শামছুল আলম। বাংলাদেশ ইসলামিক ল’ রিসার্চ সেন্টার প্রকাশিত বইটি লেখেন ড. মোহা. মেসবাহ উদ্দীন।
ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মো. শামছুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির এডিশনাল এমডি ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন মজুমদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামিক ল’ রিসার্চ অ্যান্ড লিগ্যাল এইড সেন্টারের জেনারেল সেক্রেটারি ব্যারিস্টার মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ ইবনে হোছাইন। সঞ্চালক ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামিক ল’ রিসার্চ সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক শহীদুল ইসলাম।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম বলেন, এই বইয়ে ইসলামী ব্যাংকিংয়ের মৌলিক ধারণা, এর বৈশিষ্ট্য এবং বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর বিকাশ যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে পাঠকদের দারুণভাবে সমৃদ্ধ করবে। বিশেষ করে ক্যাশ ওয়াফ্ফের মতো একটি মানবিক, কল্যাণমুখী আর্থিক ব্যবস্থা নিয়ে বিশ্লেষণাত্মক আলোচনা এই গ্রন্থকে একটি ব্যতিক্রমী উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।’
বক্তারা বলেন, “এই বইটি শুধুমাত্র ব্যাংকার বা গবেষকদের জন্য নয়, শিক্ষা, সমাজ ও মানবসেবার উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সুবিচার প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী সকলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করবে।
ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন মজুমদার বলেন, ক্যাশ ওয়াক্ত একটি অনন্য ইসলামী দাতব্য ব্যবস্থা, যা শুধু ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেই নয়, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও ব্যাপক অবদান রাখতে পারে। এই বইয়ে একদিকে যেমন ইসলামের অর্থনৈতিক দর্শনের ভিত্তি তুলে ধরা হয়েছে, অন্যদিকে বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ক্যাশ ওয়াফ্ফের ব্যবহারিক প্রয়োগ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোকপাত করা হয়েছে। লেখককে এজন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, ক্যাশ ওয়াফ্ফের মতো ইসলামী অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর আইনগত কাঠামো ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে যে প্রাঞ্জল ও গভীর বিশ্লেষণ এই বইয়ে রয়েছে, তা গবেষকদের পাশাপাশি নীতিনির্ধারকদের জন্যও দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।’ বক্তা লেখকের গবেষণাভিত্তিক কাজের প্রশংসা করে বলেন, “ক্যাশ ওয়াকফ নিয়ে এমন গভীর আলোচনা বর্তমান সময়ের আইনের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত সময়োপযোগী।
অপর বিশেষ অতিথি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউসুফ ইবনে হোছাইন তাঁর বক্তব্যে বলেন, এই বই শুধু একটি গবেষণামূলক প্রকাশনা নয়, এটি ইসলামী শিক্ষার বিকাশ এবং সামাজিক ন্যায়ভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পুনরুত্থানে একটি কার্যকর পদক্ষেপ। শিক্ষাক্ষেত্রে ক্যাশ ওয়াক্কের ভূমিকা এবং সমাজে এর উপযোগিতা নিয়ে লেখকের যে ব্যাখ্যা, তা অত্যন্ত সময়োপযোগী।
লেখক ড. মহাঃ মেসবাহ উদ্দীন বলেন, ইসলামী ব্যাংকিং ও ওয়াকফ- এই দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ইসলামী আর্থিক ধারণাকে একটি অভিন্ন কাঠামোর মধ্যে একত্রিত করার প্রয়াস থেকেই বইটি রচিত হয়েছে। গ্রন্থটি ইসলামী ব্যাংকিং ও ক্যাশ ওয়াক্ত বিষয়ক গবেষণাভিত্তিক রচনা হওয়ায় এখানে পাঠকগণ ইসলামি অর্থনীতির মৌলিক দর্শন থেকে শুরু করে বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থার অগ্রগতি, ক্যাশ ওয়াক্কের ধারণা, প্রকারভেদ, ইতিহাস ও সমাজে এর কার্যকর ভূমিকা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। গ্রন্থটি সমাজে ক্যাশ ওয়াক্ফ নিয়ে নতুনভাবে চিন্তা করার দ্বার উন্মোচন করবে বলে লেখক আশা প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মানারাত ইন্টারন্যশনাল ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন রব্বানি, ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব শাইখ শাহ মোহাম্মদ শামসুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক, আলেম, সাংবাদিক, সাহিত্যপ্রেমী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বিপুল সংখ্যক উৎসাহী পাঠক উপস্থিত ছিলেন। বইটি সম্পর্কে পাঠক মহলের ব্যপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। বইটি বইমেলায় ৬৯ নম্বর (ইসলামিক ল রিসার্চ সেন্টারের) বুকস্টলে পাওয়া যাচ্ছে।

Scroll to Top